Saturday, September 10, 2016

মৌলভীবাজারে মারধরের এক ঘটনায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তুহিন গুরুতর আহত

স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৯নং আমতৈল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তুহিন আহমেদ গত ৮ই সেপ্টেম্বর ২০১৬ইং রোজ বৃহস্পতিবার কতিপয় যুবকদের হাতে চরম অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানাগেছে, তুহিন আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার তার নিজ এলাকা খুশহাল পুর গ্রাম থেকে মৌলভীবাজার যাওয়ার পথে আমতৈল এলাকায় পৌঁছলে সেখানে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে অবস্থান নেয়া উক্ত এলাকার একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক যথাক্রমে সুমন খাঁন, রুহেল খাঁন, জাফরান খাঁন, অভি খাঁন, শুভ খাঁন, আকরাম খাঁন, সামাদ খাঁন প্রমুখরা ৯নং আমতৈল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তুহিন আহমদের সিএনজি গাড়ি আটকিয়ে তাকে বেদরক মারপিট করে তার কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে জনসম্মুখে প্রকাশ্যে এ ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে উপরোক্ত ঘটনা নিয়ে কথা বলতে ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম,শাহিন খাঁন এর মোবাইল ফোনে অনেক চেষ্টা করেও উনাকে পাওয়া যায়নি।
তবে উক্ত ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার রফিকুল ইসলাম ময়নুলের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তুহিন আহমেদের উপর অমানবিক নির্যাতনের এক বিবরণে বলেন, তুহিন আহমেদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মক ভাবে আহত করেছে আমাদের পার্শ্ববর্তী এলাকার উচ্ছৃঙ্খল ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত কতিপয় ছেলেরা।
তিনি বলেন, মারপিট ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ড যেমন চরম নিন্দনীয়, ঘৃণিত কাজ; তেমনই এলাকার শান্তিশৃঙ্খলাও চরম ভাবে ব্যাহত হয়ে থাকে এধরনে মারপিট কিংবা প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডে।
সাবেক এই মেম্বার আরো বলেন, আমতৈল গ্রামের একদল যুবকরা যেভাবে তুহিন আহমেদকে অমানবিক নির্যাতন করেছে; সেটি ভাষায় প্রকাশ করা দুঃসাধ্য।
পূর্বের কোনো শত্রুতার জের ধরে এই ঘটনাটির সূত্রপাত হয়েছিল কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে রফিকুল ইসলাম ময়নুল বলেন, আমতৈল এলাকার সুনির্দিষ্ট এক বংশের মানুষের জুলুম, নির্যাতনের শিকার আমার নিজ এলাকা খুশহাল পুর গ্রামের মানুষরা গত কয়েক দশক ধরে হয়ে আসছে।
আর এই কয়েক দশকে এনিয়ে ১০ থেকে ১২বার আমতৈল এলাকার খাঁন বংশের লোকদের কঠোর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন খুশহাল পুর গ্রামের শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষরা।
অদ্য রোজ বৃহস্পতিবার সর্বশেষ আমতৈল এলাকার কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত ছেলেদের চরম অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে আমাদের এলাকার উদীয়মান তরুণ, প্রতিভাবান ছেলে (৯নং আমতৈল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক) তুহিন আহমেদ।
তবে তুহিনকে এভাবে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে।
এদিকে খুশহাল পুর গ্রামের একাধিক মুরব্বীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনাটি সদ্য গত স্থানীয় ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে হয়েছে বলে ধারণা করছেন ঐ এলাকার মুরব্বীরা।
কারণ গত ইউপি নির্বাচনে ভিকটিম তুহিন আহমেদ তার সমর্থিত আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী সুজিত চন্দ্র দাশের হয়ে প্রচার প্রচারণা করেছিলেন।
কিন্তু সেসময় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী সুজিত চন্দ্র দাশের ভরাডুবি হয়, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম,সাহিন খাঁন জয়লাভ করেন।
এরপর নির্বাচন পরবর্তী সময়ে একাধিকবার কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ঘটেছিল।
কিন্তু এতোদিন বিএনপি সমর্থিত এম,সাহিন খাঁনের লোকেরা তুহিন আহমেদকে কিছু করতে না পারলেও গত বৃহস্পতিবার নির্মমভাবে মারপিট করে গুরুতর আহত করেছে।
খুশহাল পুর গ্রামের মুরব্বীরা বলেন, কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ও সন্ত্রাসী ছেলেরা ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ঘটিয়েছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, এই ঘটনায় অভিযুক্ত ৭জনের নাম উল্লেখ করে ও আরো অজ্ঞাতনামা কয়েক জনকে আসামি করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এব্যাপারে মৌলভীবাজার ৩ আসনের এমপি সৈয়দা সায়রা মহসীনকে অবহিত করা হলে; তিনি তুহিন আহমেদের পরিবার ও এলাকার লোকদের আশ্বস্ত করে বলেন, আমি মৌলভীবাজার মডেল থানায় বিষয়টি জানিয়ে বলেছি উক্ত ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
এদিকে সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানাগেছে, তুহিন আহমেদ বর্তমানে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
হাসপাতালে গুরুতর আহত তুহিন আহমেদকে দেখতে যান মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি কামাল হুসেন, ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুজিত চন্দ্র দাশ সহ প্রমুখ।

Sunday, September 4, 2016

রোহিঙ্গাদের নাম ব্যবহার করে বিত্তশালী মীর কাসেম

চট্টগ্রাম: মিয়ানমারের নিপীড়িত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জনগণকে বিচ্ছিন্নতাবাদে উদ্বুদ্ধ করে স্বাধীন আরাকান রাজ্য গঠনের কথা বলে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে শত, শত কোটি ডলার দেশে এনেছেন মানবতা বিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। রোহিঙ্গাদের জন্য আনা সেই বিপুল অর্থে বিত্তশালী হয়েছেন মীর কাসেম, অর্থ-বিত্তে শক্তিশালী করেছেন জামায়াতকেও।
আবার সেই বিপুল অর্থ থেকে কিছু অংশ ব্যবহার করে বিচ্ছিন্নতাবাদের নামে রোহিঙ্গা তরুণদের হাতে তুলে দিয়েছে অস্ত্র, দিয়েছে জঙ্গি প্রশিক্ষণ। তবে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আনা অর্থের বড় অংশই নিজের তহবিলে রেখে ব্যবসা-বাণিজ্য করে স্বাধীন দেশে বিপুল বিত্তবৈভবের অধিকারী হয়েছিলেন এই আলবদর কমান্ডার।
৩ সেপ্টেম্বর রাতে কাশিমপুর কারাগারে ফাঁসি কার্যকরের মধ্য দিয়ে একাত্তরের জল্লাদ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীর জীবনাবসান হয়েছে। মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন চট্টগ্রামের কক্সবাজার এবং রাঙামাটি-বান্দরবানের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মীর কাসেম আলীর জঙ্গিবাদি কর্মকাণ্ডের কথা এখন মানুষের মুখে মুখে ফিরছে।
পুলিশ সূত্রমতে, কক্সবাজার-বান্দরবান এবং রাঙামাটিতে মধ্যপ্রাচ্যের অনুদানপ্রাপ্ত রাবেতা আল ইসলাম হাসপাতালে পল্লী চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের নামে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সদস্যদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। প্রত্যেক হাসপাতালের পাশে রাবেতার নামে আসা অনুদানে মীর কাসেম আলী গড়ে তুলেছিলেন কওমি মাদ্রাসা। সেই মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা যুবকদের পাশাপাশি শিবিরের তরুণ সদস্যরাও অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিত।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত কক্সবাজারের মরিচ্যা, রাঙামাটির লংগদু এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে মীর কাসেমের রাবেতা আল ইসলাম ও কওমি মাদ্রাসার কার্যক্রম ছিল। সেখানে প্রশিক্ষণ পাওয়া যুবকরা যুদ্ধাপরাধীদের রায়ের পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে সহিংস নাশকতায় অংশ নিয়েছিল বলেও আমাদের কাছে তথ্য আছে। তবে এখন আগের সেই অবস্থান নেই। তাদের নেটওয়ার্ক আমরা ভেঙে দিয়েছি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর মধ্যপ্রাচ্যের অর্থায়নে রাঙামাটির লংগদু ও কক্সবাজারের মরিচ্যা এলাকায় দুটি রাবেতা আল ইসলাম হাসপাতাল গড়ে তোলেন মীর কাসেম আলী। দুটি মাদ্রাসার পাশে দুটি বড় কওমি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৮০ সালে কক্সবাজারে রাবেতা আল আলম ইসলামী হাসপাতালে জামায়াতের মদদে মীর কাসেমের সহায়তায় বিচ্ছিন্নতাবাদী রোহিঙ্গা তরুণ-যুবকদের নিয়ে আরএসও সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা করা হয়। ড. মোঃ ইউনুচ রোহিঙ্গা প্যাট্রিয়টিক ফ্রন্ট (আরপিএফ) নামে প্রথমে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর পরামর্শে এ সংগঠনটি আরএসও নাম ধারণ করে। নিজেদের কৌশলপত্র নির্ধারণ, মানচিত্র, পতাকা তৈরিসহ নিজস্ব সংবিধানও রয়েছে আরএসও জঙ্গিদের। ২০১২ সালে উইকিলিকসের ফাঁস করা তথ্যে ‍জানা যায়, আরএসও ওসামা বিন লাদেনের সংগঠন আল কায়েদার সঙ্গেও নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে সম্পর্ক স্থাপন করেছিল। আরএসও’র অনেক সদস্য আল কায়েদার হয়ে বিভিন্ন দেশে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল।

সূত্রমতে, মীর কাসেম আলীর তত্তাবধানে কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার পাহাড় ও সমুদ্র চরাঞ্চল এলাকায় আরএসও গড়ে তুলে ১০টি মাদ্রাসা-এতিমখানা ও রোহিঙ্গা বস্তি। এসব স্থাপনা তৈরি করতে আরএসও ক্যাডাররা অবৈধ দখলে নেয় অন্তত দু’শ একর বন বিভাগের জমি। এর নেপথ্য অর্থ যোগানদাতা মীর কাসেম আলীর রাবেতা এনজিও।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, আশি ও নব্বইয়ের দশকজুড়ে মীর কাসেম আলী নিজেই কক্সবাজার, বান্দরবান ও রাঙামাটির গহীন অরণ্যে গিয়ে রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদী নামধারী জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করতেন। রাবেতা আল ইসলামের মাধ্যমে পল্লী চিকিৎসক প্রশিক্ষণের আড়ালে তখন হাজার হাজার রোহিঙ্গা তরুণ-যুবককে মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারে এনে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা তরুণ-যুবকদের সামনে স্বাধীন আরাকান রাজ্য প্রতিষ্ঠার কথা বলে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি। আর সেগুলো প্রচার করে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে কোটি কোটি ডলার অনুদান আনতেন। সেই অনুদানের একটি বড় অংশ যেত নিজের ও জামায়াতের তহবিলে। এভাবেই ধনকুবেরে পরিণত হন মীর কাসেম।

সূত্রমতে, যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের বিচার শুরুর পর সেটা বানচালে মীর কাসেম আলী প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গা যুবকদের কাজে লাগানো শুরু করেন। আফগান ও পাকিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার আয়ুব, আবু ছালেহ, থোয়াইঙ্গাকাটার আরএসও জঙ্গি মওলানা আনিস, রোমালিয়ারছড়ায় বসবাসকারী মৌলভী শফিক, টেকপাড়ার ইসমাইল, আবু আবদুল্লাহ, মৌলভী আবদুর রহমান, মাস্টার এনাম, আবু সিদ্দিক, রামুতে বসবাসকারী মৌলভী মোয়াজ্জেম হোছাইন ও হাফেজ নায়েমসহ বহু রোহিঙ্গা জঙ্গি জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে মিলে গোপন নাশকতায় অংশ নিয়েছে বলে তথ্য ছিল পুলিশের কাছে।

ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৩ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় সহিংসতা যেভাবে জঙ্গি রূপ নিয়েছিল সেটার তদন্ত করতে গিয়ে আমরা রোহিঙ্গা জঙ্গিদের সম্পৃক্ততার তথ্য পাই। এরপর সরকারীভাবে রাবেতার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। আমরাও রাবেতা এবং কওমি মাদ্রাসাগুলোকে নজরদারির আওতায় আনি। মূলত এরপর থেকেই আরএসও জঙ্গিদের কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে এসেছে। জামায়াতের প্রভাবও নেই।

'ফাঁকা বুলি' না আওড়াতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান চীনের প্রেসিডেন্টের

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের 'ফাঁকা বুলি' না আওড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন স্বাগতিক দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। অর্থবহ আলোচনার মাধ্যমে সংকট সমাধানে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।
অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ২০টি দেশের সংগঠন জি-২০ সম্মেলন শুরু হয়েছে রোববার। এবারই প্রথমবারের মতো চীনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সম্মেলন।
দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তৃতায় চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি অর্থায়ন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ।
তাই বিশ্ব নেতাদের 'ফাঁকা বুলি' না আওড়ে অর্থবহ আলোচনার আহ্বান জানান তিনি।
এবারের সম্মেলনের আলোচ্য-সূচির মধ্যে বৈশ্বিক ইস্পাত সংকট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া বা ব্রেক্সিট এবং অ্যাপলের মতো বহুজাতিক কোম্পানির কর নীতি রয়েছে।
মিস্টার জিনপিং মনে করেন, বৈশ্বিক অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়ালেও অর্থনীতি ও বাণিজ্য নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। জি টুয়েন্টি সম্মেলনে বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলো একত্রিত হয় এবং একে ঘিরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা ব্যাপক।

এই সামিটেই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো কোনও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন তেরিজা মে। এ ছাড়া বিদায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে চীনে শেষ রাষ্ট্রীয় সফর করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। 

এতো অপমান কেন?

 সিরাজী এম আর মোস্তাকঃ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে কারা যুদ্ধাপরাধ করেছে? কারা ত্রিশ লাখ শহীদের প্রাণ কেড়েছে ও দুই লাখ নারীর ইজ্জত নিয়েছে? ২৬ শে মার্চ কালো রাতের সূচনাকারী কারা? পাকিস্তানের ঘাতক সেনাবাহিনী নাকি বাংলাদেশের অসহায় জনগণ? এ বিষয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ আদালত তথা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রায় কি? সম্প্রতি শুধুমাত্র বাংলাদেশী যুদ্ধাপরাধীদের সাজা হয়েছে। পাকিস্তানীরা ধোয়া তুলসি পাাতা। এ সংবাদ বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। সবাই জেনেছে, বাংলাদেশীরাই যুদ্ধাপরাধী; পাকিস্তানিরা নয়। বাংলাদেশের ষোল কোটি জনতা যুদ্ধাপরাধী প্রজন্ম আর পাকিস্তানীরা বীরের জাতি। এতে বাংলাদেশের সম্মান বেড়েছে নাকি কমেছে?
বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে ব্যাপক বাড়াবাড়ি শুরু হয়েছে। এ সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করাও আপত্তি ধরা হয়েছে। বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত নয় কেন, এ প্রশ্নও করা যাবেনা। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নেই কেন, তাও বলা নিষেধ। ত্রিশ লাখ শহীদ ও দুই লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোন মুক্তিযোদ্ধা নাকি রাজাকার, এসব প্রশ্ন অপরাধতুল্য। অর্থাৎ বর্তমানে যে দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধা তালিকা ও কোটা চালু আছে, তাই যথেষ্ট। এ ছাড়া অন্য কাউকে মুক্তিযোদ্ধা বলা যাবেনা, এমনকি দেশনেত্রীকেও নয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে দেশে বৈষম্যের পাহাড় সৃষ্টি হলেও তা নিয়ে মন্তব্য করা অন্যায়। এভাবে ইতিহাসের গতিধারা থেমে দেয়া কি ভালো লক্ষণ? তাতে বাংলাদেশের মান বাড়ছে নাকি কমছে?
ইতিহাসের অপমান থেকে বর্তমান অপমান আরো নিকৃষ্ট। বর্তমানে জঙ্গি বিরোধী প্রচারণা শুরু হয়েছে। ১৯৭১ সালেও পাকিস্তান সেনাবাহিনী এদেশের গেরিলা যোদ্ধাদেরকে জঙ্গি হিসেবে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। দীর্ঘ নয়মাস রক্ত-নদী প্রবাহিত করেছে। তারপর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীন দেশে জঙ্গিবাদের উৎপত্তি কেন? যাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নেই, তারা জঙ্গি হতে পারে। স্বাধীনতার চার দশক পরে বাংলাদেশ জঙ্গি কেন? আমরা কি পরাধীন হয়েছি? এ অপমান কি কখনো ঘুচবে?
এক বিদেশি বন্ধু আমাকে বললো, বন্ধু! তোমরাই যুদ্ধাপরাধী প্রজন্ম, পাকিস্তানীরা নয়। তোমরা মুক্তিযোদ্ধা বা বীরের জাতি নও, পাকিস্তানীরা বীরের জাতি। আমি বললাম, কিভাবে? সে বললো, পৃথিবীর সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে তোমরাই যুদ্ধাপরাধী; পাকিস্তানীরা নয়। অর্থাৎ তোমরাই ত্রিশ লাখ ব্যক্তিকে হত্যা করেছ ও দুই লাখ নারীকে ধর্ষণ করেছ; পাকিস্তানীরা নয়। এমনকি আন্তর্জাতিক আদালতে প্রমাণ হয়েছে, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী একাই বহু নারী ধর্ষণ করেছে। আমি কোনো উত্তর দিতে পারিনি। পৃথিবীর কাছে আমি যুদ্ধাপরাধী প্রজন্ম। এ অপমান আমার বুকের পিঞ্জরে লেগেছে।
যারা আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে পাকিস্তানীদের পরিবর্তে বাংলাদেশীদেরকে যুদ্ধাপরাধী সাব্যস্ত করেছে, তারা জঘন্য রাষ্ট্রদ্রোহী। তারা বিশ্বাসঘাতক মীর জাফরদের প্রেতাত্মা। তাদেরকে চিহ্নিত করে চিরতরে নির্মূল করা উচিত। তারাই জঙ্গি। তারা বাংলাদেশের মান নষ্টের ঘৃণ্য চক্রান্তে লিপ্ত। তারা যুদ্ধাপরাধ ও জঙ্গিবাদ ছাড়া আরো কতো অপমান যে আমদানি করবে, তার শেষ নেই।
এখনই উচিত, বাংলাদেশের বিশ্বাসঘাতক স্বার্থান্বেষী মহলকে চিহ্নিত করা। মুক্তিযুদ্ধের নামে প্রদত্ত সকল সুবিধা বাতিল করা। শুধু দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধা তালিকা বা কোটা নয়; বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চার নেতা, জেনারেল ওসমানীসহ ১৯৭১ এর সাড়ে সাত কোটি যোদ্ধা ও শহীদ সবাইকে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দেয়া। বাংলাদেশের ষোল কোটি নাগরিককে তাদের প্রজন্ম ঘোষণা করা। এতে বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গি অপমান থেকে সামান্য হলেও রেহাই পাবে।

ব্রডগেজ লাইনে আন্তনগর ট্রেন চালু করতে বিলম্ব

আন্তঃনগর

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : সেপ্টেম্বর থেকে পঞ্চগড় থেকে ঠাকুরগাঁও হয়ে সরাসরি ঢাকা আন্তনগর ট্রেন চলাচল করার সিদ্ধান্তটি বাতিল করা হয়েছে।


তবে ঐদিন থেকে দিনাজপুর-ঢাকা রুটে আন্তনগর ট্রেন ব্রডগেজ লাইনে চলাচল শুরু করবে। ঈদের পর ডিসেম্বরের মধ্যে দিনাজপুর-ঢাকা আন্তনগর ট্রেন পঞ্চগড় পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের এক কর্মকর্তা। রেলওয়ে কর্মকর্তা জানান, পরবর্তীতে একতা দ্রুতযান এক্সপ্রেস পঞ্চগড় থেকে চলবে। তাছাড়া খুলনা রাজশাহীগামী আন্তনগর ট্রেনও চলবে পঞ্চগড় থেকে।

তবে আমদানীকরা নতুন কোচ (বগি) নয়, ব্রডগেজ লাইনে চলাচলকারী পুরাতন কোচ এই রুটের আন্তনগর ট্রেনে সংযুক্ত করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার পার্বতীপুর থেকে রেলওয়ের একটি মোটর ট্রলি দিনাজপুর বিরল পর্যন্ত মহড়া দেয়। আগের দিন পার্বতীপুর থেকে-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মোটর ট্রলিটির মহড়া দেওয়ার (ট্রায়াল) কথা থাকলেও পঞ্চগড় থেকে ঢাকা আন্তনগন ট্রেন ঈদের আগে চালু হচ্ছেনা বলে কোন মহড়া অনুষ্ঠিত হয়নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এই দুই জেলার বঞ্চিত রেল যাত্রীরা। তারা রবিবার ঠাকুরগাঁও রেল স্টেশনে ঈদের আগে আন্তনগর ট্রেন চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছে।

উল্লেখ্য, ৯৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে পার্বতীপুর থেকে ভোমরাদহ পর্যন্ত ১০০ কিমি ভোমরাদহ থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ৫০ কিমি ব্রডগেজ লাইন স্থাপনের জন্য কাজ করে যথাক্রমে তমা ম্যাক্স কনস্ট্রাকশন। কাজের দীর্ঘসূত্রিতা নতুন কয়েকটি রেলওয়ে ব্রিজ তৈরির জন্য ব্রডগেজ লাইনে আন্তনগর ট্রেন চালু করতে বিলম্ব হচ্ছিল। কিন্তু ব্রডগেজ লাইন স্থাপনের কাজ শেষ হলেও এই দুই জেলা বরাবরের মতোরয়ে যায়।


রেলের পশ্চিম জোনের পাকশী ডিভিশনের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিল জানান, ভারত থেকে আমদানি করা নতুন কোচ দিয়ে ঢাকা-রাজশাহী-খুলনা রুটে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। ওই ট্রেন দুটির পুরনো ইন্দোনেশিয়ান কোচ দিয়ে দিনাজপুর-ঢাকা রুটে আন্তনগর একতা দ্রুতযান ট্রেন ব্রডগেজ লাইনে চলাচল করবে। এজন্য ২০টি কোচ প্রস্তুত করা হয়েছে। সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনে

রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক দিনাজপুর-ঢাকা রুটে ব্রডগেজ ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলেও জানান তিনি।