Saturday, September 10, 2016

মৌলভীবাজারে মারধরের এক ঘটনায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তুহিন গুরুতর আহত

স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ৯নং আমতৈল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তুহিন আহমেদ গত ৮ই সেপ্টেম্বর ২০১৬ইং রোজ বৃহস্পতিবার কতিপয় যুবকদের হাতে চরম অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানাগেছে, তুহিন আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার তার নিজ এলাকা খুশহাল পুর গ্রাম থেকে মৌলভীবাজার যাওয়ার পথে আমতৈল এলাকায় পৌঁছলে সেখানে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে অবস্থান নেয়া উক্ত এলাকার একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক যথাক্রমে সুমন খাঁন, রুহেল খাঁন, জাফরান খাঁন, অভি খাঁন, শুভ খাঁন, আকরাম খাঁন, সামাদ খাঁন প্রমুখরা ৯নং আমতৈল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তুহিন আহমদের সিএনজি গাড়ি আটকিয়ে তাকে বেদরক মারপিট করে তার কাছে থাকা নগদ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে জনসম্মুখে প্রকাশ্যে এ ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে উপরোক্ত ঘটনা নিয়ে কথা বলতে ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম,শাহিন খাঁন এর মোবাইল ফোনে অনেক চেষ্টা করেও উনাকে পাওয়া যায়নি।
তবে উক্ত ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার রফিকুল ইসলাম ময়নুলের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি উক্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তুহিন আহমেদের উপর অমানবিক নির্যাতনের এক বিবরণে বলেন, তুহিন আহমেদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে মারাত্মক ভাবে আহত করেছে আমাদের পার্শ্ববর্তী এলাকার উচ্ছৃঙ্খল ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত কতিপয় ছেলেরা।
তিনি বলেন, মারপিট ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ড যেমন চরম নিন্দনীয়, ঘৃণিত কাজ; তেমনই এলাকার শান্তিশৃঙ্খলাও চরম ভাবে ব্যাহত হয়ে থাকে এধরনে মারপিট কিংবা প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ডে।
সাবেক এই মেম্বার আরো বলেন, আমতৈল গ্রামের একদল যুবকরা যেভাবে তুহিন আহমেদকে অমানবিক নির্যাতন করেছে; সেটি ভাষায় প্রকাশ করা দুঃসাধ্য।
পূর্বের কোনো শত্রুতার জের ধরে এই ঘটনাটির সূত্রপাত হয়েছিল কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে রফিকুল ইসলাম ময়নুল বলেন, আমতৈল এলাকার সুনির্দিষ্ট এক বংশের মানুষের জুলুম, নির্যাতনের শিকার আমার নিজ এলাকা খুশহাল পুর গ্রামের মানুষরা গত কয়েক দশক ধরে হয়ে আসছে।
আর এই কয়েক দশকে এনিয়ে ১০ থেকে ১২বার আমতৈল এলাকার খাঁন বংশের লোকদের কঠোর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন খুশহাল পুর গ্রামের শান্তিপ্রিয় সাধারণ মানুষরা।
অদ্য রোজ বৃহস্পতিবার সর্বশেষ আমতৈল এলাকার কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত ছেলেদের চরম অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে আমাদের এলাকার উদীয়মান তরুণ, প্রতিভাবান ছেলে (৯নং আমতৈল ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক) তুহিন আহমেদ।
তবে তুহিনকে এভাবে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে।
এদিকে খুশহাল পুর গ্রামের একাধিক মুরব্বীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া ঘটনাটি সদ্য গত স্থানীয় ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে হয়েছে বলে ধারণা করছেন ঐ এলাকার মুরব্বীরা।
কারণ গত ইউপি নির্বাচনে ভিকটিম তুহিন আহমেদ তার সমর্থিত আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী সুজিত চন্দ্র দাশের হয়ে প্রচার প্রচারণা করেছিলেন।
কিন্তু সেসময় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী সুজিত চন্দ্র দাশের ভরাডুবি হয়, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এম,সাহিন খাঁন জয়লাভ করেন।
এরপর নির্বাচন পরবর্তী সময়ে একাধিকবার কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ঘটেছিল।
কিন্তু এতোদিন বিএনপি সমর্থিত এম,সাহিন খাঁনের লোকেরা তুহিন আহমেদকে কিছু করতে না পারলেও গত বৃহস্পতিবার নির্মমভাবে মারপিট করে গুরুতর আহত করেছে।
খুশহাল পুর গ্রামের মুরব্বীরা বলেন, কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ও সন্ত্রাসী ছেলেরা ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পূর্বপরিকল্পিত ভাবে ঘটিয়েছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, এই ঘটনায় অভিযুক্ত ৭জনের নাম উল্লেখ করে ও আরো অজ্ঞাতনামা কয়েক জনকে আসামি করে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এব্যাপারে মৌলভীবাজার ৩ আসনের এমপি সৈয়দা সায়রা মহসীনকে অবহিত করা হলে; তিনি তুহিন আহমেদের পরিবার ও এলাকার লোকদের আশ্বস্ত করে বলেন, আমি মৌলভীবাজার মডেল থানায় বিষয়টি জানিয়ে বলেছি উক্ত ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
এদিকে সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানাগেছে, তুহিন আহমেদ বর্তমানে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
হাসপাতালে গুরুতর আহত তুহিন আহমেদকে দেখতে যান মৌলভীবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি কামাল হুসেন, ৯নং আমতৈল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুজিত চন্দ্র দাশ সহ প্রমুখ।

No comments:

Post a Comment